নওগাঁর পত্নীতলায় নিত্যপণ্যের বাজারে লাগামহীন দাম বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ঘুম হারাম হয়েছে দিন আনে-দিন খায় মানুষের। চাল, ডাল, তেল, আটা, চিনিসহ প্রতিটি পণ্যের দাম আকাশচুম্বি। মাছে-ভাতে বাঙালির মাছের গায়ে হাত দেয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। ১৮০-৩০০ টাকা কেজির নিচে কোন মাছ নেই।
গরুর মাংশের কেজি ৫৫০-৬৩০ টাকা। খাশির মাংশ ৭০০-৮০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও দেশি, পাকিস্তানি ও অন্য জাতের মুরগির দাম জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাজারে শীতকালীন আগাম শাক-সবজি উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু সেগুলোর দামও গরিবের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। উল্লেখ্য, সরকার কর্তৃক বিক্রির মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও ডিম, আলু ও সোয়াবিনের তেলের দাম অজ্ঞাত কারণে তা মানা হচ্ছে না।
পত্নীতলা উপজেলা সদর নজিপুর পৌর শহরের ধামইর রোডে অবস্থিত কাঁচা বাজার ও সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক নতুনহাটে কয়েকজন তরকারি ও মুদিখানা ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানায়, ‘আমরা বেশি দামে মাল কিনে কীভাবে কম দামে বেচবো?
বাজার করতে আসা ভ্যানচালক মুজাফফর আলী (৪৫) বলেন, ‘দিনে গাড়ি চালিয়ে যে আয় হয় সন্ধ্যায় বাজার করে খালি পকেটে বাড়ি ফিরতে হয়। তিনি আক্ষেপ করে আরও বললেন, ‘ছ’মাস হলো মাছ-মাংশ খাওয়া বাদ দিয়েছি। তাতেও আমার নুন আনতে পান্তা ফুরোয়-পান্তা আনতে নুন ফুরোয় অবস্থা। বড় লোকদের মাছ-মাংশ কেনা দেখে আমারও বড় সাধ জাগে মাছ-মাংশ কেনার। কিন্তু সাধ্যে কুলোয় না। গরিব হয়ে জন্ম নেয়া যেন আমাদের আজন্ম পাপ!’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজিপুর বাসস্ট্যান্ড বণিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ.জেড মিজান বলেন, ‘বাজারে নিত্যপণ্যের লাগামহীন দাম বাড়ার কারণে কিছু অসাধু ও অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ী দায়ী। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে বাজারের বিভিন্ন জিনিসের ক্রয় মূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরার জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে।
এছাড়া আমাদেরকেও স্ব-উদ্যোগে ছাদ কৃষি ও আঙিনা কৃষি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় শাক-সবজির চাষ করতে হবে। তাহলে বাজারের উপর যেমন চাপ কম পড়বে, তেমনি অনেক রকমের সবজি নির্ভেজাল ও নিরাপদ ভাবে বাড়ি থেকে পাওয়া যাবে।
টিএইচ